Adsence

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

অন্যায় এবং পাপ কাজে বাধা দেওয়ার গুরুত্ব

  • হযরত যারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নবীকে একথা বলতে শুনেছি যে, যে জাতির মধ্যে কোন এক ব্যাক্তি পাপ কার্যে লিপ্ত হয়, আর উক্ত জাতির লোকেরা শক্তি রাখা সত্তেও তা হতে তাকে বিরত রাখে না, আল্লাহ সে জাতির ওপর মৃত্যুর পূর্বেই এক ভয়াবহ আযাব চাপিয়ে দিবেন। (আবু দাউদ)

  • আদি ইবনে আলী আলকিন্দী হতে বর্নিত। তিনি বলেন, আমাদের এক মুক্ত ক্রীতদাস আমাদের নিকট বর্ননা করেছেন যে, সে আমার দাদাকে একথা বলতে শুনেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ কখনো বিশেষ লোকদের অপরাধমূলক কাজের কারনে সাধারন লোকদের ওপর আযাব নাযিল করেন না। কিন্তু তারা যদি তাদের সম্মুখে প্রকাশ্যভাবে পাপ কাজ অনুষ্ঠিত হতে দেখে এবং তারা তার প্রতিবাদ করতে ও তা বন্ধ করতে সক্ষম হওয়া সত্তেও তা বন্ধ না করে কিংবা প্রতিবাদ না করে, তাহলে ঠিক তখনই আল্লাহ তা'আলা সাধারন ও বিশেষ সকল লোককে একই আযাবে নিক্ষেপ করেন। (শরহে সুন্নাহ)  

সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৩

রোগী দেখতে যাওয়া

১) হযরত আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রোগীকে দেখতে যাও, অভুক্তকে আহার করাও, এবং বন্দীদের মুক্ত কর। (বুখারী)

২) হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ কথা বলতে শুনেছি , এমন কোনো মুসলমান নেই, যে সকাল বেলা কোনো মুসলমান রোগীকে দেখতে যায় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য দু’আ না করে, আর সন্ধ্যা বেলা কোনো রোগীকে দেখতে যায় এবং সকাল পর্যন্ত তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা দু’আ না করে। তার জন্য জান্নাতে একটি ফলের বাগান নির্ধারিত করে দেয়া হয়। (তিরমিযী)

এক মুসলমানের উপর অন্য মুসলমানের অধিকার

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক মুসলমানের উপর অন্য মুসলমানের পাচটি অধিকার রয়েছে, সালামের উত্তর দেয়া, রোগী দেখতে যাওয়া, জানাযার সাথে চলা, দাওয়াত কবুল করা, ও হাচি দাতার উত্তর দেওয়া। (বুখারী ও মুসলিম)

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৩

ইতিকাফ এর ফযীলত


১)   হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)
২) হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ওফাত দান করার আগ পর্যন্ত তিনি রমজান মাসের শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। তারপর তার মৃত্যুর পরে তার পবিত্র স্ত্রীগন ই’তিকাফ করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)

৩) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজান মাসে শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। তারপর যখন সেই বছরটি এলো যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি বিশ দিন ই’তিকাফ করেন। (বুখারী)

রোজাদারকে ইফতার করানো


হযরত যাইদ ইবনে খালিদ আল জুহানী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ননা করেন যে, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় সে তার সমান প্রতিদান পায়। কিন্তু এর ফলে রোজাদারের প্রতিদানের মধ্যে কোনো কম হবে না। (তিরমিযী) ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ। 

সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার গুরুত্ব


১)   হযরত আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সোমবারের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জবাবে বললেন এ দিন আমি জন্মগ্রহন করেছি, এ দিন আমার ওপর নবুয়াতের দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে অথবা একথা বলেছেন এ দিন আমার ওপর ওহী নাযিল করা হয়েছে। (মুসলিম)
২)   হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেন সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল পেশ করা হয়। অতএব আমি পছন্দ করি যে, আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক যে, আমি রোজা রেখেছি। (তিরমিযী)

৩)    হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজার প্রাধান্য দিতেন। (তিরমিযী)

শাওয়াল মাসে ছয় রোজা



হযরত আবু আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখলো তারপর পরপরই শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখলো সে পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য হবে। (মুসলিম)

রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৩

সাহরী করা

১।  হযরত  আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সাহরী খাও কারন সাহরীর মধ্যে বরকত আছে। (বুখারী ও মুসলিম) 

২।   হযরত  আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সাহরী খাওয়া। (মুসলিম)

৩।     হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুয়াজ্জিন ছিলো দুজন, হযরত বিলাল ও ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বিলাল রাতে আযান দেয় । অতএব তার আযানের পর পানাহার করতে থাকো যতক্ষন না উম্মে মাকতুম আযান দেয় । (ইবনে উমর) বলেন, তাদের দুজনের আযানের মাঝখানে পার্থক্য ছিলো এতটুকু যে, একজন অবতরন করতেন এবং অপরজন আরোহন করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)  

রোজাদার


১ । হযরত আবু হোরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোনো দিন রোজা রাখে , তখন সে অশ্লীল কথা বলবে না এবং ঝগড়া ঝাটি করবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা কেউ তার সাথে মারামারি করে তাহলে তার বলা উচিৎ , আমি রোজাদার। (বুখারী ও মুসলিম) 

২।  হযরত আবু হোরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,  যে ব্যক্তি রোজা রাখার পরও মিথ্যা কথা বলা ও খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে না তার পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারী ও মুসলিম)

সোমবার, ২৭ মে, ২০১৩

দোয়া


১)
  জাবির (রা:) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,  তোমরা নিজেদের বদদোয়া করোনা,  নিজেদের সন্তানদের বদদোয়া করো না,  নিজেদের  সম্পদের জন্য বদদোয়া করো না,  কারন তা সেই সময়ে পরে যেতে পারে,  যখন  আল্লাহর  কাছে  কিছুর জন্য প্রার্থনা করলে তা কবুল হয়,  এভাবে এই  বদদোয়াটিও  তোমাদের জন্য কবুল হয়ে যেতে পারে। (মুসলিম) 

২)  আবু হুরায়রা (রা:)  থেকে  বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,  বান্দা যখন সিজদায় থাকে  তখন তার রবের সবচাইতে  নিকটবর্তী হয়,  কাজই তোমরা (সিজদায় গিয়ে)  বেশী করে দোয়া করো। (মুসলিম) 

৩)  আবু উমামা (রা:)  থেকে  বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল,  কোন দোয়া বেশী কবুল হয়?  তিনি বলেন,  শেষ রাতের মধ্যকালের ও ফরজ নামাজের পরের দোয়া । (ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং একে হাসান হাদীস বলেছেন) 


বুধবার, ১৫ মে, ২০১৩

পরিপূর্ণ ঈমান


রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন। "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসলো, আল্লাহর জন্যই কারো প্রতি শত্রুতা পোষন করলো, আল্লাহর জন্যই কাউকে দান করলো, এবং আল্লাহর জন্যই কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকলো, সে ব্যক্তি তার ঈমানকে পরিপূর্ণ করে নিলো।" (বুখারী) 

সোমবার, ১৩ মে, ২০১৩

অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করার গুরুত্ব

১) হযরত হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "সেই মহান আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রান, নিশ্চই তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দিবে এবং অবশ্যই অন্যায় ও খারাপ কাজ নিষেধ করবে, অন্যথায় আল্লাহ তার নিজের পক্ষ হতে তোমাদের উপর কঠিন আযাব পাঠাবেন। অতঃপর তোমাদের একেবারেই পরিত্যাগ করা হবে এবং তখন তোমাদের কোনো দোয়াও কবুল করা হবে না।" (তিরমিযী)


২) হযরত যারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, "আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, যে জাতির মধ্যে কোনো ব্যক্তি খারাপ কাজ করতে থাকে, সেই জাতির লোকেরা তার খারাপ কাজ করার পথ বন্ধ করে দিতে সমর্থ হওয়া সত্বেও যদি তারা না করে তবে আল্লাহ নিশ্চিত রুপে তাদের মৃত্যুর পূর্বে তাদের উপর কঠিন বিপদ চাপিয়ে দিবেন। (আবু দাউদ)



৩)  রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহর শপথ, হয় তোমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ন্যায় কাজ প্রতিষ্ঠা করবে এবং অন্যায় ও পাপকাজ থেকে লোকদের বিরত রাখবে এবং যালিমের হাত ধরে তার যুলুম বন্ধ করে দিবে ও তাকে অন্যায় পথ থেকে ফিরিয়ে সত্যের পথে পরিচালিত করবে, তাকে একমাত্র সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করে দিবে অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের পরস্পরের মনকে পরস্পরের সংঘাতে পাপ জর্জরিত করে দিবেন এবং শেষ পর্যন্ত পূর্বকালের পাপীদের মত তোমাদের উপরও অভিশাপ নাযিল করবেন। (আবু দাউদ) 


৪) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেও যখন কোনো অন্যায় কাজ (খারাপ কাজ) হতে দেখে সে অবশ্যই তা হাত দিয়ে (বল প্রয়োগে )বাধা দিবে (স্তব্ধ করে দিবে ) । যদি সে এ ক্ষমতা না রাখে তবে সে মুখের (কথার) দ্বারা তা বন্ধ করে দিবে (বাধা দিবে) । যদি সে এ ক্ষমতাটুকুও না রাখে তবে সে অন্তরের দ্বারা এর প্রতি ঘৃনা পোষন করবে।আর এটাই হচ্ছে ঈমানের দূর্বলতম স্তর।  (মুসলিম)


সুদ ঘুষ

১) ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নিশ্চই নবী (সাঃ) সুদখোর, সুদ প্রদানকারী, সুদী কারবারের স্বাক্ষী এবং সুদের চুক্তি লেখক কে অভিশাপ দিয়েছেন। (বুখারী ও মুসলিম) 

২) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "ঘুষখোর এবং ঘুষ দাতার উপর আল্লাহর অভিশাপ।" (বুখারী ও মুসলিম) 

৩) আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "বিচারের ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহনকারী এবং ঘুষ প্রদানকারীর উপর আল্লাহর অভিশাপ।"  (বুখারী ও মুসলিম) 

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০১৩

প্রতিবেশী

১) আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আল্লাহর শপথ, সে মুমিন নয়। আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়।" জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসুল, কে সে ব্যক্তি? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, "যার অনিষ্ট থেকে প্রতিবেশীগন নিরাপদ নয়।" (বুখারী ও মুসলিম)

২) আব্দুর রহমান ইবনে আবি কারাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি চায় আল্লাহ ও তার রাসূল তাকে ভালবাসুক তাহলে তার উচিৎ কথা বলার সময় সত্য কথা বলা, আমানতদারের আমানত ফিরিয়ে দেয়া, প্রতিবেশীর সংগে উত্তম ব্যবহার করা।" (মিশকাত)


মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৩

ওসিয়ত


যখন তোমাদের কারো মৃত্যু নিকটবর্তী মনে হয় এবং সে যদি কোনো সম্পদ রেখে যায়, তাহলে বৈধভাবে তার পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের জন্যে ওসিয়তের ব্যাবস্থা রয়েছে, এটা আল্লাহ ভীরুদের জন্য অবশ্যকরনীয়। যারা ওসিয়ত শোনার পর তা পরিবর্তন করে; এর গুনাহ তাদের ওপরই বর্তাবে। আল্লাহ সব কিছুই শোনেন এবং জানেন।তবে কেউ যদি সিয়তকারীর পক্ষ থেকে (ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত) পক্ষপাতিত্ব বা অন্যায়ের আশংকা করে এবং সে কারণে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে এসলাহ (সমঝোতা ও মীমাংসা) করে দেয়, তাতে তার কোনো পাপ হবেনানিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল পরম করুণাময় (সূরা আল বাকারাঃ ১৮০-১৮২)


১) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "কোনো পুরুষ বা নারী জীবনের ষাট বছর পর্যন্ত আল্লাহর আনুগত্যে অতিবাহিত করেও যদি মৃত্যু কালে ওসিয়তের মাধ্যমে উত্তরাধিকারীদের ক্ষতি সাধন করে যায় তাহলে তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন ওয়াজিব হয়ে যায়।" (মুসনাদে আহমদ)

২) হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "যে ব্যক্তি উত্তরাধীকার থেকে কোনো উত্তরাধীকারীকে বঞ্চিত করবে শেষ বিচারের দিন আল্লাহ সে ব্যক্তিকে জান্নাতের উত্তরাধীকার থেকে বঞ্চিত করবেন।" (ইবনে মাজা)

৩) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "কোনো উত্তরাধীকারীর ব্যাপারে কোনো ব্যক্তির ওসিয়ত কার্যকর হবে না যদি অন্যান্য উত্তরাধীকারীগন তাতে সম্মত না হয়।" (মিশকাত) 


৪) সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কি ওসিয়ত করেছ?" আমি বললাম "হ্যাঁ করেছি"। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন "কি পরিমান ওসিয়ত করেছ?" আমি বললাম "আমার সব ধন সম্পদ আল্লাহর জন্য ওসিয়ত  করেছি।" তিনি বললেন "তোমার সন্তান সন্ততির জন্য কি রেখেছো?" আমি বললাম "তারা বেশ ধনী।" রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন "তোমার সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ ওসিয়ত করো।" আমি বলতে থাকলাম "আরেকটু বাড়িয়ে দিন।"  অবশেষে তিনি বললেন "তিন ভাগের এক ভাগ ওসিয়ত করো, তিন ভাগের এক ভাগই যথেষ্ট।" (তিরমিযী)

রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৩

শ্রমীকের মজুরী


মজুর বা শ্রমীকের অধীকার  ঃ

১) ইবনে উমর (রাঃ) বর্ননা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "শ্রমীকের গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই   তার পাওনা চুকিয়ে দাও ।" (ইবনে মাজা)


২) আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "আল্লাহ বলেন, শেষ বিচারের দিন তিন শ্রেনীর মানুষের সাথে আমার ঝগড়া হবে । তারা হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে কোনো আজাদ (মুক্ত) লোককে ধরে নিয়ে বিক্রি করে অর্জিত অর্থ ভোগ করে। ঐ ব্যক্তি যে শ্রমীক নিয়োগ করে পুরোকাজ আদায় করে নেয়  কিন্তু তার পাওনা তাকে দেয় না।" (বুখারী)


মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

তওবা


রিয়াদুস সালেহীন প্রথম খন্ড , (পরিচ্ছদ :২)

১৩।  হযরত  আবু হোরাইরা  (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূলাল্লাহ (সা:) কে বলতে শুনেছি : আল্লাহর শপথ ; আমি  দিনের  মধ্যে  ৭০ বারেরও  অধিক আল্লাহর  কাছে ক্ষমা চাই এবং তওবা করি। (বুখারী)


১৭।  হযরত  আবু হোরাইরা  (রা:) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন,  রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন : যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়ের পূর্বে অর্থ্যাত মহাপ্রলয়ের পূর্বে তওবা  করে আল্লাহ তাআলা তার তওবা মঞ্জুর করেন।  (মুসলিম)



১৮।  হযরত  আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা:) নবী করীম (সা:) থেকে বর্ননা করেন।  তিনি বলেছেন : মহান ও পরাক্রমশালী  আল্লাহ গড়গড় করার  অর্থাত  মৃত্যুর আলামত জাহির হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর বান্দার তওবা মঞ্জুর করেন। (তিরমিযী)



২৩।  হযরত ইবনে আব্বাস ও আনাস ইবনে মালিক (রা:)  থেকে বর্ণিত।  রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন যদি কোনো আদম সন্তানের এক উপত্যকা পরিপূর্ণ সোনা রয় তবে সে দুটি উপত্যকা (ভর্তি সোনা)  পরিপূর্ণ পছন্দ করে। তার মুখ মৃত্তিকা ছাড়া আর কিছুতেই ভরেনা। অর্থাত তার আকাঙ্খা কবরের মৃত্তিকা ছাড়া আর কিছুতেই  নিবৃত হয় না। আর যে ব্যক্তি তওবা করে আল্লাহ তার তওবা  মঞ্জুর করেন।  (বুখারী ও মুসলিম) 

আত্মীয়তার সম্পর্ক

রিয়াদুস সালেহীন ১ম  খন্ড থেকে - - - -

৩১৪।   হযরত  আবু হোরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত । রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন  যে ব্যক্তি    আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে অবশ্যই তার মেহমান কে সম্মান করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে  সে  অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে অবশ্যই উত্তম কথা বলবে অথবা চুপ থাকবে। (বুখারী ও মুসলিম) 


৩১৮।  হযরত  আবু হোরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত।  এক ব্যক্তি বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ আমার এরুপ আত্মীয় আছে আমি তাদের সাথে সুসম্পর্ক  রক্ষা করি কিন্তু তারা আমার সাথে কু - ব্যবহার করে।  আমি তাদের ব্যপারে সবর ও সহনশীলতার সাথে কর্ম করি কিন্তু তারা আমার সাথে বর্বরোচিত ব্যবহার করে। তিনি বলেন তুমি যেমন বলেছ সত্যিই যদি তেমনটি হয়ে থাকে তবে তুমি যেন তাদের মুখে গরম আগুনের কনা নিক্ষেপ করছ। তুমি যতক্ষন তোমার উক্ত কর্মনীতির উপর বহাল থাকবে সে পর্যন্ত আল্লাহর তরফ হতে একজন মদদকারী  সর্বদা তোমার সাথে থাকবে। তিনি তাদের অনিষ্ট থেকে তোমাকে হেফাজত করবেন। (মুসলিম)



৩১৯।  হযরত  আনাস (রা :)   থেকে বর্ণিত  । রাসূলাল্লাহ (সা :)  বলেছেন  যে ব্যাক্তি নিজের জীবিকা প্রশস্ত হওয়া এবং নিজের আয়ুষ্কাল  বৃদ্ধি হওয়া  পছন্দ করে সে অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। (বুখারী ও মুসলিম) ।

হযরত আবু আইউব খালিদ  ইবনে  যায়িদ আল আনসারী    (রা:) থেকে বর্ণিত।  এক ব্যাক্তি বলল,  ইয়া রাসূলাল্লাহ আমাকে এমন একটি  আমল সম্পর্কে অবহিত  করুন,  যা আমাকে বেহেশতে নিয়ে যাবে এবং  দোজখ  থেকে দূরে রাখবে। নবী করীম (সা:)  বললেন  আল্লাহর ইবাদত  করবে,  তার সাথে কাউকে শরীক  করবে না,  সালাত কায়েম করবে,  যাকাত আদায় করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। (বুখারী ও মুসলিম) 
রিয়াদুস সালেহীন ১ম  খন্ড হাদিস ৩৩১। 


শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

হযরত হুযাইফা (রা:)  থেকে বর্নিত।  নবী করীম (সা:) বলেছেন : সেই সত্তার শপথ,  যার কুদরতী হাতে আমার  প্রান,  তোমরা অবশ্যই ভালো কাজের  আদেশ দিবে এবং মন্দ কাজ প্রতিরোধ  করবে,   অন্যথায় অচিরেই আল্লাহ তোমাদের ডাকে সাড়া দিবেন না।  (তিরমিযী) 

হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী  ( রা:)  থেকে  বর্নিত  নবী করীম  (সা:)  বলেছেন  :  অত্যাচারী  শাসকের কাছে  ইনসাফ পূর্ন বক্তব্য তুলে ধরাই উত্তম জিহাদ। (আবু দাউদ, তিরমিযী) 

হযরত আনাস (রা:)  থেকে বর্নিত নবী করীম (সা:) বলেছেন :তোমাদের কেউই পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবেনা,  যে পর্যন্ত না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে,  যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।  (বুখারী ও মুসলিম) 

হজরত জাবির (রা:) থেকে বর্নিত তিনি  বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন পাচ ওয়াক্ত নামাজ এর উদাহরণ হচ্ছে এরূপ যেমন তোমাদের কারো বাড়ীর দরজায় একটি গভীর নদী প্রবাহিত হচ্ছে আর সে প্রতিদিন এতে পাচবার গোসল করছে। (মুসলিম)