Adsence

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৩

ওসিয়ত


যখন তোমাদের কারো মৃত্যু নিকটবর্তী মনে হয় এবং সে যদি কোনো সম্পদ রেখে যায়, তাহলে বৈধভাবে তার পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের জন্যে ওসিয়তের ব্যাবস্থা রয়েছে, এটা আল্লাহ ভীরুদের জন্য অবশ্যকরনীয়। যারা ওসিয়ত শোনার পর তা পরিবর্তন করে; এর গুনাহ তাদের ওপরই বর্তাবে। আল্লাহ সব কিছুই শোনেন এবং জানেন।তবে কেউ যদি সিয়তকারীর পক্ষ থেকে (ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত) পক্ষপাতিত্ব বা অন্যায়ের আশংকা করে এবং সে কারণে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে এসলাহ (সমঝোতা ও মীমাংসা) করে দেয়, তাতে তার কোনো পাপ হবেনানিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল পরম করুণাময় (সূরা আল বাকারাঃ ১৮০-১৮২)


১) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "কোনো পুরুষ বা নারী জীবনের ষাট বছর পর্যন্ত আল্লাহর আনুগত্যে অতিবাহিত করেও যদি মৃত্যু কালে ওসিয়তের মাধ্যমে উত্তরাধিকারীদের ক্ষতি সাধন করে যায় তাহলে তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন ওয়াজিব হয়ে যায়।" (মুসনাদে আহমদ)

২) হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "যে ব্যক্তি উত্তরাধীকার থেকে কোনো উত্তরাধীকারীকে বঞ্চিত করবে শেষ বিচারের দিন আল্লাহ সে ব্যক্তিকে জান্নাতের উত্তরাধীকার থেকে বঞ্চিত করবেন।" (ইবনে মাজা)

৩) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন "কোনো উত্তরাধীকারীর ব্যাপারে কোনো ব্যক্তির ওসিয়ত কার্যকর হবে না যদি অন্যান্য উত্তরাধীকারীগন তাতে সম্মত না হয়।" (মিশকাত) 


৪) সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কি ওসিয়ত করেছ?" আমি বললাম "হ্যাঁ করেছি"। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন "কি পরিমান ওসিয়ত করেছ?" আমি বললাম "আমার সব ধন সম্পদ আল্লাহর জন্য ওসিয়ত  করেছি।" তিনি বললেন "তোমার সন্তান সন্ততির জন্য কি রেখেছো?" আমি বললাম "তারা বেশ ধনী।" রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন "তোমার সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ ওসিয়ত করো।" আমি বলতে থাকলাম "আরেকটু বাড়িয়ে দিন।"  অবশেষে তিনি বললেন "তিন ভাগের এক ভাগ ওসিয়ত করো, তিন ভাগের এক ভাগই যথেষ্ট।" (তিরমিযী)

রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৩

শ্রমীকের মজুরী


মজুর বা শ্রমীকের অধীকার  ঃ

১) ইবনে উমর (রাঃ) বর্ননা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "শ্রমীকের গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই   তার পাওনা চুকিয়ে দাও ।" (ইবনে মাজা)


২) আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "আল্লাহ বলেন, শেষ বিচারের দিন তিন শ্রেনীর মানুষের সাথে আমার ঝগড়া হবে । তারা হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে কোনো আজাদ (মুক্ত) লোককে ধরে নিয়ে বিক্রি করে অর্জিত অর্থ ভোগ করে। ঐ ব্যক্তি যে শ্রমীক নিয়োগ করে পুরোকাজ আদায় করে নেয়  কিন্তু তার পাওনা তাকে দেয় না।" (বুখারী)


মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

তওবা


রিয়াদুস সালেহীন প্রথম খন্ড , (পরিচ্ছদ :২)

১৩।  হযরত  আবু হোরাইরা  (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূলাল্লাহ (সা:) কে বলতে শুনেছি : আল্লাহর শপথ ; আমি  দিনের  মধ্যে  ৭০ বারেরও  অধিক আল্লাহর  কাছে ক্ষমা চাই এবং তওবা করি। (বুখারী)


১৭।  হযরত  আবু হোরাইরা  (রা:) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন,  রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন : যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়ের পূর্বে অর্থ্যাত মহাপ্রলয়ের পূর্বে তওবা  করে আল্লাহ তাআলা তার তওবা মঞ্জুর করেন।  (মুসলিম)



১৮।  হযরত  আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা:) নবী করীম (সা:) থেকে বর্ননা করেন।  তিনি বলেছেন : মহান ও পরাক্রমশালী  আল্লাহ গড়গড় করার  অর্থাত  মৃত্যুর আলামত জাহির হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর বান্দার তওবা মঞ্জুর করেন। (তিরমিযী)



২৩।  হযরত ইবনে আব্বাস ও আনাস ইবনে মালিক (রা:)  থেকে বর্ণিত।  রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন যদি কোনো আদম সন্তানের এক উপত্যকা পরিপূর্ণ সোনা রয় তবে সে দুটি উপত্যকা (ভর্তি সোনা)  পরিপূর্ণ পছন্দ করে। তার মুখ মৃত্তিকা ছাড়া আর কিছুতেই ভরেনা। অর্থাত তার আকাঙ্খা কবরের মৃত্তিকা ছাড়া আর কিছুতেই  নিবৃত হয় না। আর যে ব্যক্তি তওবা করে আল্লাহ তার তওবা  মঞ্জুর করেন।  (বুখারী ও মুসলিম) 

আত্মীয়তার সম্পর্ক

রিয়াদুস সালেহীন ১ম  খন্ড থেকে - - - -

৩১৪।   হযরত  আবু হোরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত । রাসূলাল্লাহ (সা:) বলেছেন  যে ব্যক্তি    আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে অবশ্যই তার মেহমান কে সম্মান করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে  সে  অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে অবশ্যই উত্তম কথা বলবে অথবা চুপ থাকবে। (বুখারী ও মুসলিম) 


৩১৮।  হযরত  আবু হোরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত।  এক ব্যক্তি বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ আমার এরুপ আত্মীয় আছে আমি তাদের সাথে সুসম্পর্ক  রক্ষা করি কিন্তু তারা আমার সাথে কু - ব্যবহার করে।  আমি তাদের ব্যপারে সবর ও সহনশীলতার সাথে কর্ম করি কিন্তু তারা আমার সাথে বর্বরোচিত ব্যবহার করে। তিনি বলেন তুমি যেমন বলেছ সত্যিই যদি তেমনটি হয়ে থাকে তবে তুমি যেন তাদের মুখে গরম আগুনের কনা নিক্ষেপ করছ। তুমি যতক্ষন তোমার উক্ত কর্মনীতির উপর বহাল থাকবে সে পর্যন্ত আল্লাহর তরফ হতে একজন মদদকারী  সর্বদা তোমার সাথে থাকবে। তিনি তাদের অনিষ্ট থেকে তোমাকে হেফাজত করবেন। (মুসলিম)



৩১৯।  হযরত  আনাস (রা :)   থেকে বর্ণিত  । রাসূলাল্লাহ (সা :)  বলেছেন  যে ব্যাক্তি নিজের জীবিকা প্রশস্ত হওয়া এবং নিজের আয়ুষ্কাল  বৃদ্ধি হওয়া  পছন্দ করে সে অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। (বুখারী ও মুসলিম) ।

হযরত আবু আইউব খালিদ  ইবনে  যায়িদ আল আনসারী    (রা:) থেকে বর্ণিত।  এক ব্যাক্তি বলল,  ইয়া রাসূলাল্লাহ আমাকে এমন একটি  আমল সম্পর্কে অবহিত  করুন,  যা আমাকে বেহেশতে নিয়ে যাবে এবং  দোজখ  থেকে দূরে রাখবে। নবী করীম (সা:)  বললেন  আল্লাহর ইবাদত  করবে,  তার সাথে কাউকে শরীক  করবে না,  সালাত কায়েম করবে,  যাকাত আদায় করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখবে। (বুখারী ও মুসলিম) 
রিয়াদুস সালেহীন ১ম  খন্ড হাদিস ৩৩১।